AL-USWUL ATH-THALATHA
قَالَ ابْنُ كَثِيرٍ (رَحِمَهُ اللهُ): الخَالِقُ لِهَذِهِ الأَشْيَاءَ هُوَ الْمُسْتَحِقُّ لِلْعِبَادَةِ. وَأَنْوَاعُ الْعِبَادَةِ الَّتِي أَمَرَ اللهُ بِهَا مِثْلُ: الإِسْلامِ، وَالإِيمَانِ، وَالإِحْسَانِ، وَمِنْهُ: الدُّعَاءُ، وَالْخَوْفُ، وَالرَّجَاءُ، وَالتَّوَكُّلُ، وَالرَّغْبَةُ، وَالرَّهْبَةُ، وَالْخُشُوعُ، وَالْخَشْيَةُ، وَالإِنَابَةُ، وَالاسْتِعَانَةُ، وَالاسْتِعَاذَةُ، وَالاسْتِغَاثَةُ، وَالذَّبْحُ، وَالنَّذْرُ، وَغَيْرُ ذَلَكَ مِنْ أَنْوَاعِ الْعِبَادَةِ الَّتِي أَمَرَ اللهُ بِهَا. كُلُّهَا للهِ تَعَالَى
:وَالدَّلِيلُ قَوْلُهُ تَعَالَى
{وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّـهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّـهِ أَحَدًا}
فَمَنْ صَرَفَ مِنْهَا شَيْئًا لِغَيْرِ اللهِ؛ فَهُوَ مُشْرِكٌ كَافِرٌ
:وَالدَّلِيلُ قَوْلُهُ تَعَالَى
{وَمَن يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِندَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ}
[وَفِي الْحَدِيثِ: [الدُّعَاءُ مخ الْعِبَادَة
:وَالدَّلِيلُ قَوْلُهُ تَعَالَى
{وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ }
:وَدَلِيلُ الْخَوْفِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ}
:وَدَلِيلُ الرَّجَاءِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا}
:وَدَلِيلُ التَّوَكُلِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{وَعَلَى اللَّـهِ فَتَوَكَّلُوا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ}
:وقوله
{وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّـهِ فَهُوَ حَسْبُهُ}
:وَدَلِيلُ الرَّغْبَةِ، وَالرَّهْبَةِ، وَالْخُشُوعِ، قَوْلُهُ تَعَالَى
{إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا ۖ وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ}
:وَدَلِيلُ الْخَشْيَةِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{فَلَا تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِي}
:وَدَلِيلُ الإِنَابَةِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{وَأَنِيبُوا إِلَىٰ رَبِّكُمْ وَأَسْلِمُوا لَهُ}
:وَدَلِيلُ الاسْتِعَانَةِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ}
[وَفِي الْحَدِيثِ: [...وإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللهِ
:وَدَلِيلُ الاسْتِعَاذَةِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ}
:وَدَلِيلُ الاسْتِغَاثَةِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ}
:وَدَلِيلُ الذَّبْحِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ}
[وَمِنَ السُنَّةِ: [لعَنَ اللهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللهِ
:وَدَلِيلُ النَّذْرِ قَوْلُهُ تَعَالَى
{يُوفُونَ بِالنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْمًا كَانَ شَرُّهُ مُسْتَطِيرًا }
ইবনে কাসীর বলেছেন, “যিনি এ সব জিনিসের সৃষ্টিকর্তা তিনিই তো ইবাদতের যোগ্য।”
[যে সব ইবাদাতের নির্দেশ আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন]
যে সব ইবাদতের নির্দেশ আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন তা হচ্ছে, ১. ইসলাম (পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পন) ২. ঈমান (স্বীকৃতি দেওয়া তথা অন্তর, মুখ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্বারা মেনে নেওয়া) ৩. ইহসান। (সার্বিক সুন্দরতমভাবে যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা)। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে,
(ক) الدعاء (আদ-দো‘আ) প্রার্থনা, আহ্বান;
(খ) الخوف (আল-খাউফ) ভয়-ভীতি;
(গ) الرجاء (আর-রাজা) আশা-আকাঙ্খা;
(ঘ) التوكل (আত্-তাওয়াক্কুল) নির্ভরশীলতা, ভরসা;
(ঙ) الرغبة (আর-রাগবাহ) অনুরাগ, আগ্রহ;
(চ) الرهبة (আর-রাহ্বাহ) শঙ্কা;
(ছ) الخشوع (আল-খুশূ‘) বিনয়-নম্রতা;
(জ) الخشية (আল-খাশিয়াত) ভীত হওয়া;
(ঝ) الإنابة (আল- ইনাবাহ) আল্লাহর অভিমুখী হওয়া, তাঁর দিকে ফিরে আসা;
(ঞ) الاستعانة (আল-ইস্তে‘আনাত) সাহায্য প্রার্থনা করা;
(ট) الاستعاذة (আল-ইস্তে-আযা) আশ্রয় প্রার্থনা করা।
(ঠ) الاستغاثة (আল-ইস্তেগাসাহ) উদ্ধার প্রার্থনা;
(ড) الذبح (আয্-যাবহ) যবাই করা;
(ঢ) النذر (আন্-নযর) মান্নত করা ইত্যাদি।
এগুলোসহ আরও যে সব ইবাদতের নির্দেশ আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন, সেগুলো কেবল আল্লাহর জন্যই করতে হবে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,
﴿ وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ ﴾ [الجن: ١٨]
“আর সিজদার স্থানসমূহ একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্ধারিত। অতএব আল্লাহর সঙ্গে কাউকেই আহ্বান করবে না।” (সূরা আল-জিন: ১৮)
সুতরাং কেউ যদি উপরোক্ত বিষয়ের কোনো একটি কাজ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে সম্পাদন করে তবে সে মুশরিক ও কাফের হিসেবে বিবেচিত হবে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,
﴿وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓۚ إِنَّهُۥ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧ ﴾ [المؤمنون: ١١٧]
“যে ব্যক্তি এক আল্লাহর সাথে অন্য কোনো উপাস্যকে আহ্বান করে, তার নিকট তার সমর্থনে কোনই যুক্তি প্রামাণ নেই তার হিসেব-নিকেশ হবে তার রবের কাছে, নিশ্চয় কাফের লোকেরা কখনই সফলকাম হবে না।” (সূরা মূ’মিনূন: ১১৭)
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
«الدُّعَاءُ مُخُّ العِبَادَةِ»
দো’য়া বা প্রার্থনা হচ্ছে উবাদতের সারাংশ[2]
আশ্রয় চাওয়া ইবাদত হিসেবে পরিগণিত। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,
﴿ قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّاسِ ١ مَلِكِ ٱلنَّاسِ ٢ ﴾ [الناس: ١، ٢]
“বল, আমি মানুষের রব ও মানুষের অধিপতির নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”(সূরা আন-নাসঃ ১,২)
উদ্ধার কামনা করা ইবাদত হিসেবে পরিগণিত। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,
﴿ إِذۡ تَسۡتَغِيثُونَ رَبَّكُمۡ فَٱسۡتَجَابَ لَكُمۡ ﴾ [الانفال: ٩]
“আরও (স্মরণ কর) যখন তোমরা তোমাদের রবের কাছে উদ্ধারের জন্য আবেদন জানিয়েছিলে তখন তিনি তোমাদের আবেদনে সাড়া দিলেন (কবুল করলেন)। (সূরা আনফালঃ ৯)
যবেহ করাও ইবাদত: এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,
﴿ قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣ ﴾ [الانعام: ١٦٢، ١٦٣]
“(হে রাসূল) বলে দাও, আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোনোই শরীক নেই; এবং আমি এ জন্য আদিষ্ট্ আর আমিই হচ্ছি মুসলিমদের অগ্রণী। (সূরা আল-আন‘আমঃ ১৬২-১৬৩)
হাদীসে এসেছে,
«لَعَنَ اللهُ مَن ذَبَحَ لِغَيرِ اللهِ».
“যারা অপরের নামে যবেহ করে আল্লাহ তাদের অভিশাপ দেন।”
[2]তিরমিযী, হাদীস নং ২৫১৬। মুসনাদে আহমাদ ১/২৯৩; নং ২৬৬৯।
[3]মুসলিম, হাদীস নং ১৯৭৮।