১০. কোনটা ফিতরাতী বিষয়- তাওহীদ না শিরক? দলীল পেশ করুন।

উত্তরঃ আল্লাহর প্রভুত্ব বা তাওহীদকে মেনে নেয়াটা মানুষের ফিতরাত বা সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য । আর তার সাথে অন্য কিছুকে শরীক করা একটি ভ্রষ্টতা ও অবিচার।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
" مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلَّا يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ"
“প্রতিটি নবজাত শিশু ফিতরাত তথা সৃষ্টিগত ভাবে প্রভুকে স্বীকার করার ফিতরাৎ বা স্বভাবের উপর জন্ম লাভ করে। পরবর্তীতে তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, খৃষ্টান বা অগ্নি পূজক বানায়।”- [ছহীহ] বুখারী, অধ্যায়: তাফসীর, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর সৃষ্টিতে কোন পরিবর্তন নেই।

(হা/ ৪৪০২ মুসলিম, অধ্যায়: তকদীর, অনুচ্ছেদ: প্রত্যেক সন্তান ফিতরাতের উপর জন্ম লাভ করে.... একথার অর্থ। হা/ ৪৮০৩)

আল্লাহর রুবূবিয়্যাহর অংশ হলোঃ যাবাতীয় কল্যান - অকল্যাণ তাঁর প্রজ্ঞার আলোকে তিনিই নির্ধারণ করেন।
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপর এই ক্ষমতা আরোপ করলে তাওহীদে রুবুবিয়াহ নষ্ট হয়ে যাবে।

মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَإِن يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَ ۖ وَإِن يَمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোন দুর্দশা দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূরকারী কেউ নেই। আর যদি কোন কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন তবে তিনিই তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
- সূরা আনআম/১৭.

এ আয়াতে ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি লাভক্ষতির মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা'আলা। তাঁর ইচ্ছার বাইরে কোন ব্যক্তি কারো সামান্য উপকারও করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না। আল্লাহ যদি কারও লাভ করতে চান তবে তা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন :
وَإِن يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَ ۖ وَإِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضْلِهِۦ ۚ يُصِيبُ بِهِۦ مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦ ۚ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
এবং আল্লাহ তোমাকে ক্লেশ দিলে তিনি ব্যতীত তা মোচনকারী আর কেউ নেই। এবং তিনি যদি তোমার মঙ্গল চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। আপন বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তিনি মঙ্গল দান করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা ইউনুস:১০৭


এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম বাগভী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উটে সওয়ার হয়ে আমাকে পিছনে বসিয়ে নিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেনঃ “হে বৎস’! আমি আরয করলামঃ আদেশ করুন, আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ
" يَا غُلاَمُ إِنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ احْفَظْ اللَّهَ يَحْفَظْكَ احْفَظْ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلْ اللَّهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَاعْلَمْ أَنَّ الأمة لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ وَلَوْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ رُفِعَتْ الْأَقْلاَمُ وَجَفَّتْ الصُّحُفُ"
“তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করবে, আল্লাহ তোমাকে হেফাযত করবেন। তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করো তাহলে আল্লাহকে (সাহায্যকারী হিসেবে) তোমার সামনে পাবে। কোন কিছু চাইতে হলে তুমি আল্লাহর কাছেই চাও এবং সাহায্য চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাও। সমগ্র জাতি সম্মিলিতভাবে তোমার কোন উপকার করতে চাইলে যা তোমার তাকদিরে লিখা নেই তারা কখনো তা করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি তারা সবাই মিলে তোমার এমন কোন ক্ষতি করতে চায়, যা তোমার ভাগ্যে নেই, তবে কখনোই তারা তা করতে সক্ষম হবে না। পাতা শুকিয়ে গেছে এবং কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। -(তিরমিযি, আহমাদ,,, আলবানী র. সহীহ বলেছেন)


রুবূবিয়াহ নষ্টকারী কুসংস্কারে আচ্ছন্ন জাতিঃ

🔘 শিশুর কপালে কালো টিপ দিলে অকল্যাণ হয়না,

🔘 কারো আলোচনা করার সময় সে এসে পড়লে অনেক দিন বাঁচে,


এরকম বিভিন্ন এলাকায় অজস্র কুসংস্কার রয়েছে।

Search Videos

Go to top